বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্য প্রযুক্তির ব্যপক ব্যবহার হচ্ছে, বাংলাদেশ ও তার ব্যতিক্রম নয়।

ভূমিকাঃ

আধুনিক জীবনের সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রাচীন সভ্যতা থেকে শুরু করে আজকের এই নগর সভ্যতার দিকে তাকালে আমরা এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন লক্ষ করতে পারি। এই যুগান্তকারী পরিবর্তন এনে দিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। সমাজের যে স্তরে এখনো বিজ্ঞানের ছোঁয়া লাগেনি সে স্তরে এখনো উন্নতির ছোঁয়া প্রবেশ করতে পারেননি। তাই বলা যায় যে সভ্যতার উন্নয়নের মূলে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।

ব্যবহারের ক্ষেত্র সমূহঃ

বর্তমান পৃথিবীতে যে দেশের মানুষজন লেখাপড়া শিখে শিক্ষিত যারা জ্ঞান চর্চা করে সেই দেশ হচ্ছে সম্পদশালী দেশ। তথ্যের চর্চা আর বিশ্লেষণ থেকে জ্ঞান জন্ম নেয় তাই যে দেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে বিশ্লেষণ করতে পারে সেই দেশ হচ্ছে পৃথিবীর সম্পদশালী দেশ। বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

(ক) কৃষিক্ষেত্রেঃ

এখন কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে আইসিটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ইন্টারনেটে ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে যেখানে কৃষিবিষয়ক অনেক তথ্য সম্পর্কে কৃষকেরা জানতে পারে তাছাড়া মোবাইলে কৃষি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

(খ) চিকিৎসাক্ষেত্রেঃ

চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাবহার লক্ষ্য করা যায়। রোগীর তথ্য সংরক্ষণ থেকে শুরু করে আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় টেলিমেডিসিন প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। বর্তমানে অনেক ডাগনেস্টিক সেন্টার রুগীদেরকে অলনাইলে রিপোর্ট দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে।

(গ) পরিবেশ ও আবহাওয়াঃ

আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য এখন আইসিটির ব্যবহার করা হচ্ছে। ১১ মে ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ করার হয়। বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়লে তখন স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে দুর্গত এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা চালু রাখা সম্ভব হবে।

(ঘ) গবেষণা গবেষণাঃ

গবেষণায় আইসিটির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমরা অনেক জটিল গবেষণা অনেক সহজে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে করতে পারছি।

(ঙ) ব্যাংকিংঃ

বর্তমানে প্রায় সব ব্যাংক অনলাইন সেবা দিচ্ছে ফলে এটিএম মেশিন থেকে যেকোনো সময় টাকা তোলা যায় তাছাড়া বর্তমান ব্যাংকগুলো ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে

(চ) শিক্ষা ক্ষেত্রেঃ

বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার শুধু গবেষণা আটকে নিন বড় শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যাধিক হারে লক্ষ্য করা যায় শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার প্রয়োজনেপ্রযুক্তি ব্যবহার করছে শিক্ষাক্ষেত্রে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস ডিজিটাল ডিকশনারি বুক অনলাইন ক্লাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে

(ছ) ব্যবসা ক্ষেত্রেঃ

ব্যবসাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে চোখে পরার মত। আমাদানি-রপ্তানি বেড়েছে কয়েকগুন। এর পিছনে মূল কারন হল উন্নত যোগাযোগ ব্যাবস্থা। ফলে অর্জিত হয়েছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা যা দেশের জিডিপিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্সের ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে।

প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধাঃ

বর্তমান বিশ্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের সুবিধা বলে শেষ করা যাবে না সকালে ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমোতে যাওয়া মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা আমাদের সময়কে আমাদের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে কৃষি প্রযুক্তি দৌলতে আজ সারা বিশ্বে মোট জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঘরে বসেই শিক্ষার্থীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে প্রযুক্তির বলে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বাতি জ্বলছে পাখা হিটার রেডিও টিভি ফ্রিজ ভিসিআর বিসিবি লিভ এয়ার কুলার কম্পিউটার চলছে শহর-নগরে যে আকাশচুম্বী বহুতলা ভবন গড়ে উঠেছে আমরা যে বাস-ট্রাক ট্যাক্সিতে করে যাওয়ার করছি তার সবগুলোই প্রযুক্তির অবদান।

উপসংহারঃ

কালের বিবর্তনে মানব জীবন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তথ্য ও যোগাযোগ এর অবদান রয়েছে মানব জীবনে বিজ্ঞানের এ ব্যবহারকে ইতিবাচক দিকে রাখতে হবে তথ্য ও প্রযুক্তির আলোয় প্রতিটি মানুষকে আলোকিত করতে হবে সমস্ত কলুষতা থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে মুক্ত করার জন্য সকল ধরনের অপব্যবহার থেকে তথ্য কে সরিয়ে রাখতে হবে তবেই মানবসভ্যতা যথার্থ উন্নয়ন সম্ভব।